এক দিবাস্বপ্ন…
সেপটেম্বর ১৯৪৪ ইং। নাৎসি শাসিত নেদরল্যান্ডের এক অরণ্য। রাত্রি আনুমানিক আটটা হবে। স্বাভাবিকভাবে এই প্রদেশে এই সময় শান্তি বিরাজ করে। অরণ্যের আশেপাশে জনবসতি ও কম। যারা এইখানে পুরুষানুক্রমে বাস করে আসছে তারা শান্তি কালেই রাতের আগে আশ্রয়ের ঠাঁই নিয়ে নেয়, এই যুদ্ধকালিন পরিস্থিতিতে অরণ্যের ভেতরে তাদের চলাফেরার কথা চিন্তা করা তো দুরের কথা|
আমি আমার মোটরসাইকেলের উপর চড়ে এই নিস্তব্ধ রাত্রি তে অরণ্যের পায়ে হাটা এক পথ দিয়ে যচ্ছি। অনেক দিন দিবাকালে এই পথ দিয়ে যাওয়া আসার অভ্যাসে রাস্তার প্রতিটি আঁক-বাঁক আমার একান্ত পরিচিত, তবু ও আজ আমার বুকে চাঁপা এক ভীতি কাজ করছে| আজ যে কোনো মতে হের ভোলকারের কাছে আমাকে সংবাদটা পৌঁছে দিত হবে। মিত্রশক্তিরা ঘণ্টাখানেক আগে আমি যেখানে মোতায়েন রয়েছি ওই গ্রামের কাছের মাঠে কয়েকশো সৈনিক প্যারাসুট এর মাধ্যমে নামিয়েছে। ওরা কিন্তু সব ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রেখেছিল। হের ভোলকারের কাছে ফোনে এই বার্তা দিতে গিয়ে দেখি যে যে ফোনযন্ত্রটি কাজ করছে না। নিশ্চয় ওদের কোন গুপ্তচর ঠিক সময়ে ফোনের তার কে কেটে দিয়েছে। আমি ও আর দেরি করিনি, সঙ্গে সঙ্গে আমার মোটরসাইকেলটি নিয়ে হের ভোলকারের উদ্দেশ্য়ে রওয়ানা হয়ে পড়েছি|
পুরো অরণ্যতে একমাত্র আমার মোটরসাইকেলের শব্দ ও আলো ছাড়া কোনো সাড়াশব্দ নাই, চারদিকে নিঝুম অন্ধকার| আরো কিছু মাইल যেতে পারলেই হের ভোলকারের সাক্ষাৎ পাবো আশা করি|
এই সব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ দেখি যে আমি গন্তব্যস্থলে এসে পৌঁছে গেছি। রাত্রিবেলার দিবাস্বপনের অবসান এইখানেই ঘটল। অরন্যের সেই রাত্রির শেষে কি হয়েছিল সেটা জানার সৌভাগ্য, কি দুর্ভাগ্য, আমার আর হয়নি।
জনৈক ব্যক্তির চঞ্চল কল্পনাপ্রসূত ঘটনা|